Header Ads

test

নিল আর্মস্ট্রং (১৯৩০-২০১২ খ্রিষ্টাব্দ)


নিল আর্মস্ট্রং (১৯৩০-২০১২ খ্রিষ্টাব্দ)

পৃথিবী থেকে মানুষের চিরতরে বিদায় নেয়া এক অনিবার্য নিয়তি। মানুষ মরে গেলে যেমন দুঃখ হয়, বেদনা হয়, তেমনি আবার সেই স্মৃতি আমরা ধীরে ধীরে ভুলেও যাই। কিন্তু কিছু মানুষ পৃথিবীতে এসে আবার চলে গেলেও বেঁচে থাকে তার কর্মের মাঝে। এরকমই এক মহানায়ক ছিলেন নিল আর্মস্ট্রং। আর্মস্ট্রং একজন মার্কিন নভোচারী ও বৈমানিক। তিনি চাঁদে অবতরণকারী প্রথম মানুষ হিসেবে পৃথিবীর ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আর্মস্ট্রংয়ের নেতৃত্বে ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই মর্ত্যের মানুষ প্রথমবারের মতো চাঁদের মাটি স্পর্শ করেছিলেন। তিনি ছিলেন অ্যাপোলো-১১ নাভোযানের কমান্ডার। সেদিনের সেই দৃশ্য বিশ্বের ৫০ কোটিরও বেশি মানুষ টেলিভিশনে দেখেছিল। তিনি ছিলেন ঠান্ডা মস্তিষ্কের মানুষ, তার মেধা ছিল অত্যন্ত প্রখর। আর শান্ত ও তীক্ষ্ম ছিল তার চিন্তার পরিধি। বিবিসির বিবৃতি থেকেও জানা যায়, আর্মস্ট্রং ছিলেন একজন বরফশীতল মস্তিষ্কের মানুষ। আর্মস্ট্রং যে নভোযানটি পরিচালনা করেছিলেন সেটি যখন পৃথিবীতে নামছিল তখন ধীরে ধীরে তার জ্বালানি শেষ হয়ে আসছিল তখনো তিনি দক্ষতার সঙ্গে ঠিক রাখেন এবং মাথা ঠান্ডা রেখে ঠিক ভাবেই এসে পৌঁছান। এরকম এক অসাধারণ গুণের মানুষ ছিলেন আর্মস্ট্রং।

নিল আর্মস্ট্রং ১৯৩০ সালের ৫ আগষ্ট জন্মগ্রহন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর স্টেফান কনিগ আর্মস্ট্র ও ভায়োলা লুইসা দম্পতির প্রথম সন্তান নিল আর্মস্ট্রং। তিনি বংশানুক্রিমক ভাবে স্কটিশ ও জার্মান। নিল আমস্ট্রংয়ের আরও দুজন সহোদর ছিল। ছেলেবেলা থেকে নিল আর্মস্ট্রংয়ের আমেরিকার ২০ টি ভিন্ন শহরে থাকার অভিজ্ঞতা ছিল। মাত্র দুবছর বয়সে তিনি তার পিতার সাথে ক্লীভল্যান্ড এয়ার রেস দেখতে গিয়েছিলেন। ১৯৩৬ সালের ২০ জুলাই তিনি প্রথম বিমানে চড়ার অভিজ্ঞতা লাভ করেন।

আর্মস্টং পড়াশোনা করেন পার্ডু বিশ্ববিদ্যালয় এ, এবং পরে ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াতে। নভোচারী হওয়ার আগে আর্মস্ট্রং মার্কিন নৌবাহিনীর বৈমানিক ছিলেন। তিনি কোরীয় যুদ্ধে অংশ নেন। এর পর তিনি ড্রাইডেন ফ্লাইট রিসার্চ সেন্টারের পরীক্ষামূলক বিমান চালক হিসাবে যোগ দেন। বিভিন্ন পরীক্ষামূলক বিমান নিয়ে তিনি ৯০০ এর ও অধিক বার উড্ডয়ন করেন।

আর্মস্ট্রং এর পরবর্তী ও শেষ অভিযান হয় এপোলো ১১ নভোযানের অভিযান নেতা হিসাবে। এই অভিযানে তিনি ১৯৬৯ খ্রীস্টাব্দের জুলাই ২৬ তারিখের গ্রীনউইচ মান সময় ১২:৩৬ পিএম এ চাঁদে অবতরণ করেন। প্রথম মানুষ হিসাবে চাঁদে পা রাখার সময় তিনি মন্তব্য করেন:
This is a small step for (a) man, but a giant leap for mankind
অর্থাৎ, এটি একজন মানুষের জন্য ক্ষুদ্র একটি পদক্ষেপ, কিন্তু মানবজাতির জন্য এক বিশাল অগ্রযাত্রা
চাঁদে আর্মস্ট্রং ও এডুইন অল্ড্রিন জুনিয়র অবতরণ করেন, ও ২.৫ ঘণ্টা কাটান।

অ্যাপোলো ১১ এর পরে আর্মস্ট্রং আর মহাকাশ অভিযানে যান নাই। তিনি ১৯৭৯ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অফ সিনসিনাটির ঊড্ডয়ন প্রকৌশলের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেন।

৮২ বছরে বাইপাস সার্জারির কিছুদিন পর ২০১২ সালের ২৫ আগষ্ট তিনি মৃত্যুবরন করেন।

No comments