Header Ads

test

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১)


নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ভয়ানক যুদ্ধবাজ, হিংস্র যোদ্ধাদের বীর বলে মহানায়কের মর্যাদা দেয়া হত।তাদের নিয়েই হত ইতিহাস।তাদের কর্মকান্ড, হত্যা, বিজয় সবকিছুকেই বিশাল করে উপস্থাপন করেই তখনকার ইতিহাসের গল্পগুলো।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অবস্থা বদলে যায়। কিন্তু সেইসব লিখিত ইতিহাস রয়ে গেছে। তাই জানা যায় সেই সব বিখ্যাত যুদ্ধবাজদের অথবা বীর মহানায়কদের কথা। এরকমই একজন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১)। ফ্রান্সের পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি লম্বা সম্রাট নেপোলিয়ন।

নেপোলিয়ন মারা যান সেন্ট হেলেনায় ইংরেজ কর্তৃক নির্বাসিত অবস্থায় ১৮২১ সালের ৫ মে। তাকে ওখানেই সমাহিত করা হয়। এর বিশ বছর পর ফ্রান্সের রাজা তার মরদেহ ফ্রান্সে আনার উদ্যোগ নেন। তখন দেখা যায় নেপোলিয়নের দেহ অক্ষত আছে!!

তখন ধারণা জন্মে তাকে ইংরেজ রা আর্সেনিক দিয়ে স্লো পয়জনিং করে হত্যা করেছে। অবশ্য এটাকে অনেকে সত্য বলে মনে করেন না। যেমন লাইভ সায়েন্সের একটা আর্টিকেলে বলা হয়েছে আসলে নেপোলিয়ন কে আর্সেনিক দেয়া হয় নি। তিনি নিজেই নাকী সারাজীবন ধরে আর্সেনিক ব্যবহার করে আসছিলেন।

যাইহোক স্লো পয়জনিং এর ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে নেপোলিয়নের দেশেই আরেক নেতার প্রায় একই প্রক্রিয়ায় মৃত্যু হল। তখন হত্যাকারী ছিল ইংরেজ।এবার ইজরাইলিরা। জাত ভীন্ন হলেও একটা ক্ষেত্রে দুদলের হত্যাকারীর মিল আছে। এরা দুদলই পিছন থেকে আঘাতকারী।

নেপোলিয়ন ফ্রান্স কে খুব ভালোবাসতেন। তার জীবদ্দশায় শেষ বাক্য ছিল, France, the head of the Army, Josephine!
এখানে জোসেফাইন তার স্ত্রীর নাম। নেপোলিয়নের বয়স যখন ২৬ তখন তিনি ৬ বছরের বড় বিধবা জোসেফাইনের প্রেমে পড়েন। ১৭৯৬ এ বিয়ে করেন। তবে জোসেফাইন কে বিয়ে করার পর নেপোলিয়ন প্রেম করতেন আরেক জুনিয়র অফিসারের স্ত্রীর সঙ্গে। ওই মেয়ের নাম ছিল পলিন। তাকে ডাকা হত ফ্রান্সের ক্লিওপেট্রা বা নেপোলিয়নের ক্লিওপেট্রা।

জোসেফাইন ও এই সময় প্রেম করছিলেন আরেক যুবকের সাথে। নেপোলিয়ন যেমন আগ্রাসী যুদ্ধবাজ ছিলেন তেমন ছিলেন আগ্রাসী প্রেমিক। তার অসংখ্য (!) মহিলার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কাচ্চা বাচ্চা ও ছিল। সেইসব কাচ্চা বাচ্চাদের অনেকে বোনাপার্ট উপাধি নামের শেষে লাগালেও তাদের মা কে তা জানা যেত না।

নেপোলিয়ন অবশ্য তার এই স্বভাবের জন্য আক্ষেপ ও করতেন। সেন্ট হেলেনায় নির্বাসিত থাকা কালে তিনি বলতেন, জোসেফাইন কে আমি ভালবাসতাম, কিন্তু তাকে কখনো শ্রদ্ধা করি নি।

নেপোলিয়নের ব্যাক্তিত্ব ছিল প্রবল। তার সময়ে সমগ্র ইউরোপে তার ইমেজ ছিল দেবতাতুল্য। তাকে হত্যা করার সাহস কেউ করত না। কথিত আছে তাকে যখন বন্দি করা হয় তখনো ইংরেজ সৈন্যরা তার সামনে ভয়ে ভয়ে কথা বলত।

১৮১৪ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী প্যারিস অবরোধ করে। নেপোলিয়ন আত্নসমর্পনে বাধ্য হন। ব্রিটিশরা ঘোষনা দেয়, নেপোলিয়নই ইউরোপের শান্তির পথে একমাত্র বাধা। তাকে নির্বাসন দেয়া হয় এলবা দ্বীপে। ফ্রান্সে র ক্ষমতায় ব্রিটিশরা বসিয়ে রাখে রাজা অষ্টাদশ লুইকে।

নেপোলিয়ন এলবা দ্বীপে সৈন্য সামন্ত সংগ্রহ করে ১৮১৫ সালে পালিয়ে আবার ফিরে আসেন ফ্রান্সে। এসে দেখতে পান দ্বার বন্ধ। তখন তিনি মর্মস্পর্শী ভাষায় বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, লুই না, আমি তোমাদের রাজা। শুনে ফ্রান্সের সৈন্যরা দ্বার খুলে দেয়। লুই ফ্রান্স ত্যাগ করেন। নেপোলিয়ন রাজা হন আবার।

তার দেশপ্রেম হয়ত কিছুটা উগ্র ছিল। তাই হয়ে উঠেছিল আক্রমণাত্বক। জীবত থাকা কালে তিনি তার কবর যেন ফ্রান্সে হয় এজন্য লিখেছিলেনঃ
I wish my ashes to rest
On the banks of the Seine
Among the French people
That I Have loved so much loved.

No comments